Educational Blog Sites

Thursday, March 8, 2018

Chapter-01 (ICT: World & Bangladesh Perspective)

১. তথ্য প্রযুক্তি (Information Technology) কাকে বলে?
উঃ কম্পিউটার এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ, একত্রীকরণ, সংরক্ষন, প্রক্রিয়াকরন এবং বিনিময় বা পরিবেশনের ব্যবস্থাকে তথ্য প্রযুক্তি বলে। সংক্ষেপে এই প্রযুক্তিকে IT বলা হয়।

২. যোগাযোগ প্রযুক্তি (Communication Technology) কাকে বলে?
উঃ যে প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনো তথ্য এক স্থান হতে অন্য স্থানে কিংবা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে স্থানান্তর কিংবা একজনের ডেটা অন্যের নিকট স্থানান্তরের প্রক্রিয়াকে যোগাযোগ প্রযুক্তি বলে।

৩. ICT কী?
উঃ ICT এর পূর্নরূপ হলো Information & Communication Technology । যে প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ, সত্যতা ও বৈধতাযাচাই, সংরক্ষন, প্রক্রিয়াকরন, আধুনিকরন ও ব্যবস্থাপনাকরা হয় এবং তথ্য এক স্থান হতে অন্য স্থানে কিংবা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে স্থানান্তর কিংবা একজনের ডেটা অন্যের নিকট স্থানান্তরের প্রক্রিয়াকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলে। অথবা, যে প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনো ডেটাকে এক স্থান হতে অন্য স্থানে কিংবা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে স্থানান্তর কিংবা একজনের ডেটা অন্যের নিকট স্থানান্তরের প্রক্রিয়াকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলে।

৪. তথ্য প্রযুক্তির অবদান সমূহ লেখ।
উঃ ক) অপচয় রোধকরে।
খ) সময় সাশ্রয়ী হয়।
গ) তথ্যের প্রাপ্যতা সহজ হয়।
ঘ) তাৎক্ষনিক যোগাযোগ সম্ভব হয়। যেমনঃ ফোন, ফ্যাক্স, ইন্টারনেট, ই-মেইল, এসএমএস, এমএমএস প্রভৃতি।
ঙ) সর্বক্ষেত্রে দক্ষতাবৃদ্ধি পায়।
চ) ব্যবসায়-বানিজ্যে লাভজনক প্রক্রিয়া সৃষ্টিকরে।
ছ) মানব সম্পদের উন্নয়ন ঘটায়।
জ) শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই অনলাইনে বিশ্বের বিভিন্ন নামী-দামী শিক্ষা প্রতিষ্টানে শিক্ষা গ্রহন করতে পারবে।
ঝ) ঘরে বসেই বিদ্যুৎ,পানি, গ্যাস, মোবাইল ফোনের বিল সহ সকল কাজ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে।

৫. গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম কী? বিশ্বগ্রামের ধারণা ব্যাখ্যা কর।
বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজ: বিশ্বগ্রাম হলো এমন একটি ধারণা যা পৃথিবীর সকল দেশকে একটি একক গ্রামের আওতায় নিয়ে এসেছে। এক্ষেত্রে ভুমিকা রেখেছে তথ্য ও যোগোযোগ প্রযুক্তি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি তথা ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে আজ সমগ্র পৃথিবী গ্রামের মতো ছোট হয়ে আসছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা খুব সহজে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারি। যে কোনো বিষয়ে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করতে পারি, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারি। পৃথিবীর কোথায় কি ঘটছে তা আমরা জানতে পারি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে বিশ্বের মানুষ একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে। বিশ্বগ্রাম হলো তথ্য প্রযুক্তির বন্ধনে আবদ্ধ একটি ক্ষেত্র যা সারা বিশ্বকে হাতের মুঠোর মধ্যে আবদ্ধ করেছে।

৬. বিশ্বগ্রামের সুবিধা ও অসুবিধা সমুহ লিখ।
 বিশ্বগ্রামের সুবিধাসমুহ নিম্মে আলোচনা করা হল –
১) বিশ্বগ্রাম হলো এমন একটি ধারণা যা পৃথিবীর সকল দেশকে একটি একক গ্রামের আওতায় নিয়ে এসেছে।
২) বিশ্বগ্রাম তথা ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা খুব সহজে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারি।
৩) বিশ্বগ্রামের কারণে যে কোনো বিষয়ে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করতে পারি, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারি।
৪) বিশ্বগ্রামের ফলে ঘরে বসেই আমরা পৃথিবীর কোথায় কি ঘটছে তা জানতে পারি।
৫) বিশ্বগ্রাম তথা ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে বিশ্বের মানুষ একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে।
৬) বিশ্বগ্রামের ফলে সাংস্কৃতিক জগতে বিপ্লব সাধিত হয়েছ্।
৭) বিশ্বগ্রামের ফলে ঘরে বসেই বিশ্বের বা দেশের নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষা সেবা গ্রহন করা যাচ্ছে।

বিশ্বগ্রামের অসুবিধাসমুহ নিম্মে আলোচনা করা হল –
১) ই-মেইল একাউন্টে প্রায়ই কিছু কিছু অচেনা ও অপ্রয়োজনীয় ই-মেইল পাওয়া যায় যা আমাদের বিরক্তি ঘটায়।
২) ক্রিমিনালরা সাইবার আক্রমনের মাধ্যমে কারও সিস্টেমে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে ফাইল, প্রোগ্রাম কিংবা হার্ডওয়্যার ধ্বংস বা ক্ষতি সাধন করে।
৩) সাইবার চুরির মাধ্যমে কারোর একাউন্ট থেকে তার সমস্ত টাকা নিজ একাউন্টে ট্রান্সফার করে নেয়া।
৪) কাউকে ভয়-ভীতি দেখানো বা হুমকি দেয়া।
৫) পর্ণোগ্রাফির মাধ্যমে সামাজিক অবক্ষয়ের সৃষ্টি হচ্ছে।

৭. বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থার ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকগুলো আলোচনা কর।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি: বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের শতকরা আশি জন লোক কৃষি কাজ করে থাকে। সুতরাং কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়ন হলে আমাদের দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনেক অগ্রগতি সাধিত হবে। আমাদের দেশে কৃষি এবং কৃষকের উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভিন্নভাবে সাহায্য করছে। বাংলাদেশ সরকার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে দরিদ্র বিমোচনের হাতিয়ার হিসেবে দেখছে। আইসিটির মাধ্যমে কৃষি এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন সম্ভব। বিভিন্ন ধরনের টেলিভিশন ও রেডিও অনুষ্ঠান (যেমন-হৃদয়ে মাটি ও মানুষ, কৃষি দিবানিশি, মাটির টানে ইত্যাদি) কৃষকদের কৃষি ফসল, চাষ পদ্ধতি, বাজারজাতকরণ প্রভৃতি সম্পর্কে অনুষ্ঠান প্রচার করে এবং কৃষকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকে। ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র, যার মধ্যে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী তাদের প্রয়োজনীয় তথ্যসেবা পেয়ে থাকে, কৃষিপণ্য সংμান্ত ওয়েব সাইট থেকে কৃষকরা তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেতে পারে এবং ফসলের রোগ প্রতিরোধ পদ্ধতি, উন্নত জাত নির্বাচন ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য লাভ করতে পারেন। এর ফলে কৃষক অধিক ফসল উৎপন্ন করতে পারে এর ফলে কৃষি এবং কৃষক অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়।
আজকাল কম্পিউটারের প্রয়োজনীয় লেখালেখির কাজ এবং প্রশিক্ষণের জন্য তথ্যসেবা প্রদানের জন্য বিভিন্ন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে এবং ফলে বেকারদের কর্মসংস্থান এবং অন্যদের দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। নিজে আত্মকর্মসংস্থান করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন। অদক্ষদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী তৈরির ফলে আমরা বিদেশে আইটিতে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি যা অর্থনৈতিকভাবে দেশকে সমৃদ্ধ করে। বর্তমানে আমাদের দেশে-বিদেশে কর্ম সংস্থানের জন্য রেজিস্ট্রেশনের কাজ ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র থেকে করা যায়। এর ফলে গ্রামের লোকজন বিশেষ করে অর্ধশিক্ষিত/ অশিক্ষিত লোকজন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সেবা নিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থানের প্রμিয়া করতে পারে এবং বিদেশে গিয়ে অর্থ উপার্জন করে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আজকাল ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার ইউটিলিটি বিল এমনকি আয়কর রিটার্ন দাখিল এবং করের টাকা পরিশোধ করা যায়। এই পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ বিধায় জনসাধারণ আয়কর দিতে উৎসাহী হয় এবং এর ফলে প্রচুর রাজস্ব আদায় হয় জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে ব্যাংকিং খাতে আমূল পরিবর্তন হয়েছে, ব্যাংক এখন সাধারণ চেক বইয়ের পরিবর্তে এমআইসি আর (MICR) চেক ব্যবহার করে। এর ফলে নিকাশ ঘরের কাজ অতি অল্প সময়ের মধ্যে হয়ে থাকে। তাছাড়াও বিদেশ দেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রেও পূর্বের ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে ইলেকট্রনিক্স ফান্ড ট্রান্সফার পদ্ধতিতে টাকা পাঠানো হয়। ফলে ফান্ড স্থানান্তর অতি দ্রুত হয় যা আমাদের অর্থনীতি উন্নতি ত্বরান্বিত করে।

৮.কৃষিকাজে ও বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে বিশ্বগ্রামের ভূমিকা আলোচনা কর।
কৃষিক্ষেত্রে বিশ্বগ্রাম তথা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগ: বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো কৃষি প্রধান দেশ। এসব দেশের ৮০% লোক কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। কৃষি শিল্পের উন্নতির সাথে এসব দেশের উন্নতি নির্ভর করে। আর এই কৃষির উন্নয়ন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখ করার মতো। আজ-কাল জমির মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মাটির বিভিন্স উপাদানের উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করতে পারেন, কোনো মাটিতে কোনো ফসল ভালো উৎপাদন হবে। তথ্য প্রযুক্তির বদে․লতে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন কৌশল কৃষকরা জানতে পারে, পূর্বে তারা শুধু অভিজ্ঞতার আলোকে চাষাবাদ করত। রোগ বালাইর আক্রমন থেকে রক্ষার জন্য কার্যকরী ঔষধ, প্যাকেজিং ব্যবস্থা, বাজারজাতকরণ ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে পেয়ে থাকে। অনলাইন কৃষি বাজারও চালু হয়েছে-যার ফলে কৃষকরা সহজে বেশি দামে কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারে। কৃষকরা গ্রামে থেকেই মুহূর্তের মধ্যে বড় বড় শহরের পাইকারি বাজারের দাম জানতে পারে। ফলে কম দামে ফসল বিক্রি করে লোকসান দিতে হয় না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন গবেষণা ও প্রয়োগের ফলে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে উন্নত, অধিক ফলনশীল, প্রতিকূল পরিবেশে সহনশীল খাদ্যশস্য আবিষ্কার করছে যা কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।

বেকার সমস্যা সমাধানে বিশ্বগ্রাম তথা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগ: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে দেশ এবং বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা দেশে এবং দেশের বাইরে কোথায় কোন ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে সে সম্পর্কে জানতে পারি এবং সে অনুযায়ী নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারি। বর্তমানে প্রায় সকল অফিস-আদালতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। এর ফলে এ ফিল্ডের দক্ষ লোকের যেমন- প্রোগ্রামার, সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, এডমিনিস্ট্রেটর ইত্যাদি প্রয়োজন এবং এদের সাথে আরো অনেক সাপোর্টিং স্টাফ প্রয়োজন। এর ফলে অসংখ্য লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। আমাদের দেশে প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে তথ্য ও সেবাকেন্দ্র চালু হয়েছে। এর ফলে অনেক বেকার যুবক/যুবতীর আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। দেশি বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ/প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মী তৈরি করার জন্য অনেক ট্রেনিং স্কুল/সেন্টার গড়ে উঠেছে-যাতে কর্মসং¯থানের সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা উল্লেখ করার মতো। কিন্তু তাদের একটু যুযোপযোগী প্রশিক্ষণ দিলে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে এদের বেকারত্ব ঘুচানো সম্ভব। আউটসোর্সিং হলো দেশে বসে অনলাইনের মাধ্যমে অন্যদেশের ক্লায়েন্টদের কাজ করিয়ে দিয়ে বৈদেশিক অর্থ উপার্জন করা। কাজগুলোর মধ্যে কম্পিউটার বা মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি, ওয়েব ডিজাইন করা, ইমেজ এডিটরের কাজ। যারা একাজে জড়িত তাদেরকে ফ্রিল্যান্সার বা মুক্ত ব্যবসায়ী বলা হয়।

৯. শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির প্রভাব অপরিসীম ব্যাখ্যা কর। অথবা, শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার লেখ। [ব-১৩]
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগোযোগ প্রযুক্তির প্রভাব/ব্যবহার: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষা বিস্তারে একটি শক্তিশালী টুলস। ফরমাল এবং নন-ফরমাল উভয় পদ্ধতিতেই এটি অত্যন্ত কার্যকর। যে কোনো সময় এবং যে কোনো স্থানে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে আইসিটির বদৌলতে। কোনো শিক্ষার্থী দিনের যে কোনো সময় ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। সকল কোর্স সংμান্ত তথ্য ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। তাছাড়াও রেডিও এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে লেকচার ব্রডকাস্টিং করা হয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা প্রচুর পরিমাণে কোর্স সম্পর্কীয় উপাত্ত এবং তথ্য পেয়ে থাকে। সুতরাং উভয়ের জন্য যে কোনো বিষয়ে গবেষণা সহজ হয়। ক্লাসের পাঠের সাথে সংগতিপূর্ণ বিভিন্ন চিত্র, অডিও, ভিডিও ব্যবহার এবং ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণমূলক ক্লাসের মাধ্যমে পাঠের বিষয়কে শিক্ষার্থীদের সামনে আরো সহজ, বোধগম্য করে তোলা হয়। এর জন্য কম্পিউটার এবং প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয়। শিক্ষকরা তাদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের আপডেট রিচার্স/ গবেষণা সম্পর্কে ইন্টারনেট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। কোনো বিষয়ে গবেষণার জন্য আর লাইব্রেরির মধ্যে বসে থাকতে হয় না। শুধু ইন্টারনেটে প্রবেশ করে উল্লেখিত/ প্রয়োজনীয় বিষয় লিখে সার্চ দিলেই বের হয়ে আসে শত শত প্রবন্ধ রচনা বা বিভিন্ন ছবি। নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর অডিও এবং ভিডিও পাওয়া যায়। যা ব্যবহার করে শিক্ষকরা ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করতে পারে। শিক্ষকরা নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর লেকচার/ প্রবন্ধ/ অডিও/ ভিডিও নির্দিষ্ট ওয়েব সাইটে আপলোড করে রাখতে পারে, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে না গিয়েও ঐ লেকচার ডাউনলোড করতে পারে। বর্তমানে কিছু পরীক্ষাও অনলাইনের মাধ্যমে নেয়া হয়। পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নেও তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, নৈর্ব্যত্তিক পরীক্ষার উত্তর পত্র মূল্যায়ন এবং রচনামূলক অংশের নম্বর মিলকরণ, বিভিন্ন বিষয়ের গ্রেডিং করা এবং জিপিএ নির্ণয় করা ইত্যাদি সকল কাজই প্রযুক্তি নির্ভর স্বয়μিয়ভাবে প্রস্তুত করা হয়।

১০. কৃষিক্ষেত্রে শস্য নির্বাচন থেকে শুর” করে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত সামগ্রিক প্রক্রিয়ায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে একজন কৃষক কীভাবে উপকৃত হতে পারেন?
কৃষিক্ষেত্রে বিশ্বগ্রাম তথা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগ: বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো কৃষি প্রধান দেশ। এসব দেশের ৮০% লোক কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। কৃষি শিল্পের উন্নতির সাথে এসব দেশের উন্নতি নির্ভর করে। আর এই কৃষির উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখ করার মতো। আজ-কাল জমির মাটি পরীক্ষানিরীক্ষা করে মাটির বিভিন্ন উপাদানের উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করতে পারেন, কোনো মাটিতে কোনো ফসল ভালো উৎপাদন হবে। তথ্য প্রযুক্তির বদৌলতে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন কৌশল কৃষকরা জানতে পারে, পূর্বে তারা শুধু অভিজ্ঞতার আলোকে চাষাবাদ করত। রোগ বালাইর আμমণ থেকে রক্ষার জন্য কার্যকরী ঔষধ, প্যাকেজিং ব্যবস্থা, বাজারজাতকরণ ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে পেয়ে থাকে। অনলাইন কৃষি বাজারও চালু হয়েছে-যার ফলে কৃষকরা সহজে বেশি দামে কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারে। কৃষকরা গ্রামে থেকেই মুহূর্তের মধ্যে বড় বড় শহরের পাইকারি বাজারের দাম জানতে পারে। ফলে কম দামে ফসল বিμি করে লোকসান দিতে হয় না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন গবেষণা ও প্রয়োগের ফলে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে উন্নত, অধিক ফলনশীল, প্রতিকূল পরিবেশে সহনশীল খাদ্যশস্য আবিষ্কার করছে যা কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।

১১. গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম কী? বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বগ্রাম-এর ভূমিকা মূল্যায়ন কর।
বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজ: বিশ্বগ্রাম হলো এমন একটি ধারণা যা পৃথিবীর সকল দেশকে একটি একক গ্রামের আওতায় নিয়ে এসেছে। এক্ষেত্রে ভুমিকা রেখেছে তথ্য ও যোগোযোগ প্রযুক্তি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি তথা ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে আজ সমগ্র পৃথিবী গ্রামের মতো ছোট হয়ে আসছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা খুব সহজে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারি। যে কোনো বিষয়ে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করতে পারি, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারি। পৃথিবীর কোথায় কি ঘটছে তা আমরা জানতে পারি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে বিশ্বের মানুষ একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে। বিশ্বগ্রাম হলো তথ্য প্রযুক্তির বন্ধনে আবদ্ধ একটি ক্ষেত্র যা সারা বিশ্বকে হাতের মুঠোর মধ্যে আবদ্ধ করেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বগ্রামÑএর ভুমিকা নিম্মে আলোচনা করা হলো-
১) যোগাযোগ (Communication): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার যোগাযোগ ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন সাধন করেছে। বর্তমানে যোগাযোগের সবচেয়ে সহজ মাধ্যমগুলো হলো মোবাইল ফোন, ই-মেইল, টেলি কনফারেন্সিং, ভিডিও কনফারেন্সিং, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি।

২) কর্মসংস্থান (Employment): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে দেশ এবং বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা দেশে এবং দেশের বাইরে কোথায় কোন ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে সে সম্পর্কে জানতে পারি এবং সে অনুযায়ী নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারি।

৩) শিক্ষা (Education): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষা বিস্তারে একটি শক্তিশালী টুলস। ফরমাল এবং নন-ফরমাল উভয় পদ্ধতিতেই এটি অত্যন্ত কার্যকর। যে কোনো সময় এবং যে কোনো ¯ ানে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে আইসিটির বদৌলতে।

৪) চিকিৎসা (Treatment): বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখ করার মতো। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণা যা তথ্য ও প্রযুক্তিনির্ভর তা আজ মানুষকে এনে দিয়েছে দীর্ঘ এবং সুন্দর জীবন। আইসিটি ব্যবহারের ফলে এক্সরে, আলট্রাসাউন্ড, এম আর আই (গজও) প্রভৃতি প্রযুক্তির সুফল আমরা পেয়ে থাকি।

৫) অফিস (Office): অফিস-আদালত অনেকটাই এখন তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি-সমৃদ্ধ। অফিস বলতে এখন আর কক্ষের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে স্তূপ করা গুছানো বা অগুছানো কাগজ ফাইল, রেজিস্টার-এর উপর ধূলাবালি পড়ে আছে এমন একটি পরিচিত দৃশ্য চোখে পড়ে না। টেবিলের উপর একটি কম্পিউটার, প্রিন্টার ইত্যাদি প্রযুক্তির সব যন্ত্রপাতি প্রায় সকল অফিসেই রয়েছে।

৬) বাসস্থান (Residence): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের বাস¯ ানকে করে তুলেছে অধিকতর নিরাপদ। আমরা আমাদের বাস্থানের বাইরের দিকে সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এর ফলে অনির্দিষ্ট ব্যক্তি বা অন্য কিছুর গতি-বিধি মনিটরিং করা যায়।

৭) ব্যবসা-বাণিজ্য (Business): বর্তমান যুগ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। সকল ক্ষেত্রেই তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যেও আইসিটির ব্যবহার অপরিসীম। আইসিটি ব্যবহারের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য এখন শুধু নির্দিষ্ট দোকান বা ব্যবসা কেন্দ্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে।

১২. বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার উপাদানসমূহের বর্ণনা দাও।
বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার উপাদান গুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিম্মে দেয়া হলো-
ক) ডেটা বা উপাত্ত: ডেটা বা উপাত্ত হলো সাজানো নয় এমন কিছু বিশৃঙ্খল ফ্যাক্ট। ডেটা বা উপাত্তকে প্রক্রিয়াকরনের মাধ্যমে তথ্যে পরিনত করা হয়। বিশ্বগ্রামে তথ্যই হচ্ছে মুল্যবান সম্পদ। বিশ্বগ্রামে ডেটা বা তথ্যকে মানুষের প্রয়োজনে একে অপরের সাথে বিনা মুল্যে বা অর্থের বিনিময়ে শেয়ার করতে পারে।

খ) হার্ডওয়ার: বিশ্বগ্রামে হার্ডওয়্যার বলতে ইলেকট্রনিক এর বিভিন্ন যন্ত্র বা যন্ত্রাংশকে বুঝায়। যেমন- কম্পিউটার, মডেম, ইন্টারনেট কার্ড, হাব ইত্যাদি। বিশ্বগ্রামে যে কোন ধরণের যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য উপযুক্ত হার্ডওয়্যার যন্ত্রপাতির একান্ত প্রয়োজন।

গ) সফটওয়্যার: বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠায় হার্ডওয়্যার যন্ত্রপাতিকে সচল করার জন্য সফটওয়্যার প্রয়োজন। সফটওয়্যার ছাড়া হার্ডওয়্যার অর্থহীন। সফটওয়্যারের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাইজিং সফটওয়্যার ইত্যাদি।

ঘ) মানুয়ের সক্ষমতা: বিশ্বগ্রামের উপাদান গুলোর মধ্যে মানুষের দক্ষতা বা সক্ষমতা অন্যতম। বিশ্বগ্রাম যেহেতু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নির্ভও সেহেতু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে অবকাঠামোগত জ্ঞান ছাড়া এর সুফল পাওয়া যাবে না। এছাড়া যেকোন বিষয়ে জ্ঞান আহরণ ও বিতরণের জন্য এই প্রযুক্তিতে মানুষের সক্ষমতা প্রয়োজন।

ঙ) নেটওর্য়াক কানেকটিভিটি: বিশ্বগ্রামে মের”দন্ড হলো নিরাপদভাবে বিভিন্ন রিসোর্স শেয়ার করার নেটওর্য়াক বা কানেকটিভিটি যার মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থানরত প্রতিটি মানুষের মাঝে তথ্য ও উপাত্ত পৌছে দেয়া। নিরাপদে তথ্য আদান-প্রদানই হচ্ছে বিশ্বগ্রামের মুল ভিত্তি।

১৩. ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি ? ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে ভার্চুয়াল বিয়েলিটির প্রযোজনীয়তা বর্ণনা কর।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual Reality): ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো কম্পিউটার এবং বিভিন্ন প্রকার সেন্সর এর সমন্বয়ে গঠিত একটি পরিবেশ যার অস্তিত্ব থাকতে পারে আবার সম্পূর্ণ কাল্পনিক হতে পারে । যেমন- সৌরজগতের ধারণাকে কাজে লাগিয়ে কম্পিউটার, স্পিকার, বিভিন্ন ছবি বা চিত্র বিশেষ পদ্ধতিতে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা হয় যা প্রদর্শনের পর দর্শকের মনে হবে যেন সে সৌর জগৎ প্রদক্ষিণ করেছেন। এখানে অভিজ্ঞতা এবং কল্পনা শক্তি কাজে লাগিয়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বপ্নে ভুবন তৈরি করা হয়।

ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে ভার্চুয়াল বিয়েলিটির প্রযোজনীয়তা: শিক্ষাক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি: শিক্ষাক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে শিক্ষা গ্রহণ ও প্রদান করা যায়। এর সুবিধা হলো এখানে ত্রিমাত্রিক পরিবেশে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করে ছাত্র-ছাত্রীদের বিরাট বড় গ্রুপ তৈরি করা যায়। সামরিক বাহিনীতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি: সামরিক বাহিনীতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হচ্ছে। তিনটি (সেনা, নৌ বিমান) বাহিনীতেই এটি প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বিশেষ করে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি, অন্যান্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি এবং এসময় তাদের সঠিক করণীয় প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। স্বাস্থ্যসেবায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি: স্বাস্থসেবায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে অস্ত্রোপচারে এবং আতঙ্কগ্রস্ত রোগীদের চিকিৎসা, রোবটিক্স সার্জারি এবং চিকিৎসা প্রশিক্ষণে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা হলো এটা ডাক্তারদের নিরাপদ পরিবেশে নতুন কিছু শিখতে বা অনুশীলন করতে সাহায্য করে। এবং এতে রোগীদেও কোনো বিপদ ঘটছে না। ভার্চুয়াল রোবটিক্স সার্জারি: ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এর একটি জনপ্রিয় ব্যবহার হলো রোবটিক্স সার্জারি, যেখানে ডাক্তার দ্বারা পরিচালিত রোবটিক্স ডিভাইস কম সময়ে এবং কম জটিলতা ও কম ঝুঁকিসহ অপারেশন করে। প্রকৌশল বিভাগে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি: ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রকৌশল বিভাগে ত্রিমাত্রিক মডেলিং টুলস এবং পরিকল্পনার নকশা দেখার জন্য ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতিতে প্রকৌশলীরা তাদের ত্রিমাত্রিক প্রকল্প দেখতে পারে এবং কীভাবে প্রকল্পটি কাজ করবে তা ভালোভাবে বুঝতে পারবে। মিডিয়ায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি: ভার্চুয়াল রিয়েলিটি চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশনের প্রোগ্রামে নতুন বৈশিষ্ট্য দিয়েছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে নির্মিত হচ্ছে ”লচ্চিত্র। তাছাড়াও সংগীত, বই তৈরি, ক্সবজ্ঞানিক প্রদর্শনী, টেলিকমিউনিকেশন, নির্মাণ, প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ ইত্যাদিতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হয়।

১৪. ই-মইেল কি? এর প্রয়ােজনীয়তা, সুবধিা ও অসুবধিাগুলাে আলােচনা কর।
ই-মইেল: ই-মইেল হচ্ছে Electronic mail এর সংক্ষপ্তি রূপ। ইন্টারনটেরে মাধ্যমে তথ্যরে আদান প্রদান করার জন্য ই-মইেল ব্যবহার করা হয়। র্বতমান বশ্বিরে সবচয়েে স্বল্পব্যয়ী এবং দ্রুততম ইলকেট্রনকি যোগাযোগ মাধ্যম হল ই-মইেল। অন্যান্য যে কোন মাধ্যমরে চয়েে তুলনামূলক ভাবে ই-মইেল দ্রুতগামী এবং খরচ অনকে কম। যেখানে সাধারণ ডাকযোগে চিঠি প্রেরণে কয়েকদিন সময় লাগে; সেখোনে ই-মইেল এর সাহায্যে কয়কে সকেন্ডেরে মধ্যে পৃথবিীর যকেোন প্রান্তে তথ্য আদান-প্রদান করা যায়। এ কারণইে ই-মইেল সারা বশ্বিে জনপ্রয়িতার র্শীষে রয়ছে। ই-মইেল ব্যবহাররে প্রয়োজনীয়তা: ই-মইেল ব্যবহাররে প্রয়োজনীয়তা কতটুকু তা বলার অপক্ষো রাখে না। এটি যোগাযোগরে সবচযে়ে সহজ মাধ্যম। তাছাড়া কম খরচ, দ্রুত ব্যবহাররে সুবধিা, র্মাকটেংি এবং কলাবোরশেনরে জন্যে দনি দনি ই-মইেল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বডে়ইে চলছ।
ফ্রি ই-মইেলরে সুবধিা ও অসুবধিা:
সুবধিা: ১) এটি বনিামূল্যে ব্যবহার করা যায়।
২) সহজে একাউন্ট খোলা যায়।
৩) ভ্যালু এডডে র্সাভসি পাওয়া য়ায়।

অসুবধিা: ১) সিকিউরিটি কম।
২) তথ্য উদ্ধার করা কঠিন ।
৩) ই-মইেল এ্যাড্রেসগুলো বানিজ্যিকভাবে বিক্রি হয়ে যায়।
৪) গোপনীয়তার অভাব ।
৫) কখনও তথ্য পুনরুদ্ধার করার কোনো সুযোগ থাকে না।

১৫) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কী ? বুদ্ধিভিত্তিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রসমুহ আলোচনা কর।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: কম্পিউটারের নিজস্ব কোন বুদ্ধি নাই। মানুষের চিন্তা-ভাবনা বা বুদ্ধিমত্তার পদ্ধতি যন্ত্রেও মাদ্যমে বাস্তবায়ন করাটাই হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। যার কারণে কম্পিউটারের চিন্তরভানাগুলো মানুষের মতই হয়ে থাকে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
ক) বুদ্ধিভিত্তিক বিজ্ঞান, খ) রোবটিক্স ও গ) ন্যাচারাল ইন্টারফেস।
বুদ্ধিভিত্তিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রসমুহ নিম্মে আলোচনা করা হলো-
আবহাওয়া গবেষণা (Taming the weather):আবহাওয়ার পূর্বাভাস এর জন্য প্রচুর পরিমাণ ডেটা বিশ্লেষণ করতে হয়। অভিজ্ঞ আবহাওয়াবিদগণও সবসময় সূক্ষ্মভাবে তা বিশ্লেষণ করতে পারে না। বিজ্ঞানীরা এমন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সফটওয়্যার তৈরি করতে পারে যা সকল ডেটা নির্ভুলভাবে বিশ্লেষণ, মানুষের মিস করা spot patterns আমলে নিয়ে অতি অল্পসময়ে নির্ভুল ফলাফল দিবে। সফটওয়্যারটি যখন একটি বড় ঝড় দেখবে তখন সে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এবং গণমাধ্যমকে সতর্ক সংকেত পাঠাবে যা জীবন বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে।

বিপদজনক/ বিরক্তিকর কাজ (Tackling dangerous or boring task):আমাদের ক্সদনন্দিন কাজগুলোর মধ্যে অনেক কাজই বিরক্তিকর অথবা বিপদজনক। যেমন- ঘরের মেঝে পরিষ্কার করা, সিঁড়ি, আসবাবপত্র পরিষ্কার করার জন্য আমরা রোবটিক্স ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করে থাকি, আসলে এটাও আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স (Artificial Intelligence) এর ব্যবহার। তাছাড়া খনির ভিতর কাজ করা বা আগুনের অতি নিকটে কাজ করার মতো স্মার্ট রোবট ব্যবহার করা হয়।

পৃথিবী সংরক্ষণে (Saving the Planet):কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে শিঘ্রই বিজ্ঞানীরা রোবট ও অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী পদার্থগুলো পরিষ্কার করবে। উন্নত সফটওয়্যার দ্বারা মেশিনগুলো বুঝতে পারবে বা পার্থক্য করতে পারবে জৈবিক প্রাণী এবং বিপদজনক বর্জ্য বা তেল। এগুলো ক্ষতিকর বর্জ্য গ্রাস করবে এবং জৈব বর্জ্য অক্ষত ছেড়ে দিবে।

চালকবিহীন পরিবহন (Driverless transport):গাড়ি আগাম বার্তা দিবে দুর্ঘটনা থেকে অথবা নিজেই চলতে শুর” করবে এমনটি কি চিন্তা করা যায়? হ্যাঁ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খুব শিঘ্রই এটি সম্ভব করতে পারে ক্যামেরা, সেন্সর এবং বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে চালকবিহীন ট্রেন মানুষের সাহায্য ছাড়া জাপানের এক শহর থেকে অন্য শহরে যাতায়াত করছে।

মহাকাশের সীমা অতিক্রম:কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের ফলে বিংশ শতকের মহাকাশ সীমা পেরিয়ে অনেকদূর যেতে পারবে এবং সৌরজগতের সীমানা পিছনে ফেলে বিচরণ করা সম্ভব হবে। নাসা এরই মধ্যে মানুষ্যবিহীন উপগ্রহ দূরবর্তী ছায়াপথে প্রেরণের উদ্যোগ নিয়েছে। যেখানে মানুষ পৌঁছতে অনেক সময় লাগত। চালকবিহীন রোভার্স মঙ্গল গ্রহ এবং অন্যান্য গ্রহ থেকে ছবি উঠিয়ে বিজ্ঞানীদের কাছে পাঠিয়েছে যেখানে মানুষের বিচরণ অসম্ভব।

অর্থনীতি রক্ষা করে: ২০১০ সালের হিসাবে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক শেয়ার বাজার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সফটওয়্যার দ্বারা পরিচালিত হয়। এই প্রোগ্রাম spot patterns অ্যলগরিদম ব্যবহার করে ভবিষ্যদ্বাণী করে। এর উপর ভিত্তি করে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে। এই প্রযুক্তি বিনিয়োগকারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও লাভবান করতে সাহায্য করে।

১৬) রোবট কি? প্রাত্যহিক জীবনে রোবটিকস এর ব্যবহার লিখ। অথবা, রোবটিকস এর গুর”ত্ব ব্যাখ্যা কর।
রোবট: রোবট হচ্ছে এক ধরনের মেশিন যা কম্পিউটার প্রোগ্রাম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এটি মানুষের মতো কাজ করতে পারে অথবা এর কাজের ধরন দেখে মনে হয়, এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আছে। রোবট যে শুধু মানুষের আকৃতির হবে তা নয়। একে তার কাজের উপযোগী করে আকার এবং আকৃতি দেয়া হয়। রোবট অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এবং ক্লান্তিহীনভাবে পূর্বলিখিত প্রোগ্রামের ভিত্তিতে কাজ করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রানজিশন রিসার্চ কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী জোসেফ এফ এনজেলবার্গার হচ্ছেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট এর জনক। তার রোবটটি ছিল ভ্যাকুয়াম ক্লিনার রোবট। এটি কোনো মানুষের সাহায্য ছাড়াই বড়বড় সুপার মার্কেট, এয়ারপোর্ট বা ফ্যাক্টরি পরিষ্কারের কাজ করতে পারে।

প্রাত্যহিক জীবনে রোবটিকস এর ব্যবহার: শিল্পক্ষেত্রে কঠোর শারীরিক পরিশ্রম বা জটিল এবং বিপদজনক কাজগুলো রোবটের সাহায্যে করা যায়। এর সাহায্যে বিরামহীনভাবে দীর্ঘ সময় কাজ করতে পারে। কারখানায় কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত রোবটের সাহায্যে নানারকম বিপদজনক কাজ; যেমনÑওয়েল্ডিং, ঢালাই, ভারি মালামাল ওঠানো-নামানো যন্ত্রাংশ সংযোজন ইত্যাদি কাজ করা হয়। বিভিন্ন ধরনের মাইক্রো সার্কিটের কাজ সূচার”রূপে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারে রোবটের সাহায্যে যা মানুষের দ্বারা সম্ভব নয়। নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট বা সাগরের তলদেশের বিভিন্ন গবেষণার কাজের জন্য রোবট ব্যবহার করা হয়।

১৭) ক্রায়ো সার্জারি কী ? ক্রায়ো সার্জারির পদ্ধতি সর্ম্পকে আলোচনা কর।
ক্রায়ো সার্জারি (Cryosurgery): ক্যান্সার বর্তমান বিশ্বের একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা। এমন কি সকল উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের পরও এর সুনির্দিষ্ট কোনো প্রতিকার নেই। ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে এগুলোর সবকটিরই আবার বিধ্বংসী পার্শ্বপ্র্রতি্ক্রিয়া রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অপারেশন করে অপসারণ, কেমোথেরাপি, বিকিরণ চিকিৎসা (Radiation treatment), হাইপারথারমিয়া (Hypothermia), ক্যান্সার চিকিৎসায় আরো একটি পদ্ধতি রয়েছে যার নাম হলো ক্রায়োসার্জারি (Cryosurgery).পদ্ধতি: ক্রায়ো সার্জারিতে তরল নাইট্রোজেন ব্যবহার করা হয়। অত্যন্ত কম তাপমাত্রায় আক্রান্ত টিস্যুতে নাইট্রোজেন প্রয়োগ করা হয় যাতে কোষগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। এটি একটি সাধারণ এবং জনপ্রিয় পদ্ধতি। কারণ এ পদ্ধতি সহজ, কার্যকর এবং কম খরচ। ক্রায়ো সার্জারির জন্য রোগীর তেমন কোনো পূর্ব প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না, তবে ব্যথার প্রতি অতি সংবেদনশীল রোগীদের ৩০-৯০ মিনিট পূর্বে ব্যথানাশক (Numbing Cream) কৃত্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। এ পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এতে ঝুঁকি কম এবং সময় অনেক কম লাগে। তরল নাইট্রোজেন কটন, স্প্রে বা মেটাল প্রোব ব্যবহার করে আক্রান্ত টিস্যুতে ৩০ সেকেন্ডের জন্য প্রয়োগ করা হয়। অধিকতর আক্রান্তের ক্ষেত্রে ৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত প্রয়োগ করা যেতে পারে। প্রয়োগকৃত স্থানে বরফের কারণে সাদা হয়ে যায়, কারণ তরল নাইট্রোজেন অত্যন্ত ঠান্ডা বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই তারা সামান্য অস্থায়ী ব্যথা এবং কম্পন অনুভব করে।

 ১৮) “তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সমাজের জন্য এক বিরাট আশীর্বাদ” উক্তিটির যথার্থতা যাচাই কর। [কু-০৪,চ-০৩]
অথবা, সমাজ জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রভাব সম্পর্কে তোমার মতামত দাও। [চ-০৭, সি-০৭, দি-১২,রা-০৬,কু-০২,০৬,০৯,য-০৩,১০,ব-০১,০৫,০৭,০৯,ঢা-০১,০৫,০৭,০৯]
অথবা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের সমাজে কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে তার ওপর একটি প্রতিবেদন তৈরি কর।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সমাজের জন্য যে এক বিরাট আশীর্বাদ তা নিম্মে আলোচনা করা হল -
১) যোগাযোগ (Communication): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার যোগাযোগ ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন সাধন করেছে। বর্তমানে যোগাযোগের সবচেয়ে সহজ মাধ্যমগুলো হলো মোবাইল ফোন, ই-মেইল, টেলি কনফারেন্সিং, ভিডিও কনফারেন্সিং, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি।

২) কর্মসংস্থান (Employment): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে দেশ এবং বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা দেশে এবং দেশের বাইরে কোথায় কোন ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে সে সম্পর্কে জানতে পারি এবং সে অনুযায়ী নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারি।

৩) শিক্ষা (Education): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষা বিস্তারে একটি শক্তিশালী টুলস। ফরমাল এবং নন-ফরমাল উভয় পদ্ধতিতেই এটি অত্যন্ত কার্যকর। যে কোনো সময় এবং যে কোনো স্থানে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে আইসিটির বদৌলতে।

৪) চিকিৎসা (Treatment): বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখ করার মতো। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণা যা তথ্য ও প্রযুক্তিনির্ভর তা আজ মানুষকে এনে দিয়েছে দীর্ঘ এবং সুন্দর জীবন। আইসিটি ব্যবহারের ফলে এক্সরে, আলট্রাসাউন্ড, এম আর আই (MRI) প্রভৃতি প্রযুক্তির সুফল আমরা পেয়ে থাকি।

৫) অফিস (Office): অফিস-আদালত অনেকটাই এখন তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি-সমৃদ্ধ। অফিস বলতে এখন আর কক্ষের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে স্তূপ করা গুছানো বা অগুছানো কাগজ ফাইল, রেজিস্টার-এর উপর ধূলাবালি পড়ে আছে এমন একটি পরিচিত দৃশ্য চোখে পড়ে না। টেবিলের উপর একটি কম্পিউটার, প্রিন্টার ইত্যাদি প্রযুক্তির সব যন্ত্রপাতি প্রায় সকল অফিসেই রয়েছে।

৬) বাসস্থান (Residence): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের বাসস্থানকে করে তুলেছে অধিকতর নিরাপদ। আমরা আমাদের বাসস্থানের বাইরের দিকে সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এর ফলে অনির্দিষ্ট ব্যক্তি বা অন্য কিছুর গতি-বিধি মনিটরিং করা যায়।

৭) ব্যবসা-বাণিজ্য (Business): বর্তমান যুগ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। সকল ক্ষেত্রেই তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। ব্যবসাবাণিজ্যেও আইসিটির ব্যবহার অপরিসীম। আইসিটি ব্যবহারের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য এখন শুধু নির্দিষ্ট দোকান বা ব্যবসা কেন্দ্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে।

১৯) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কী ? জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফলে আমরা যেসব উপকার পেয়ে থাকি তা আলোচনা কর।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (Genetic Engineering): পরীক্ষাগারে বিজ্ঞানীরা জীবন্ত প্রাণির ডি এন এ (DNA) পরিবর্তন করার জন্য যে কৌশল অবলম্বন করে তাকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলে। আবার অন্যভাবে বলা যায়, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং হলো কোনো প্রাণীতে ম্যানুয়েললি ডিএনএ (DNA) যোগ করার প্রμিয়া। কোনো জীবের জীবন, বৃদ্ধিসহ অন্যান্য বৈশিষ্ট্য ঐ জীবের উঘঅ এর উপর নির্ভর করে।DNA এর যে অংশ বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী তাকে জিন (Genes) বলে। আণবিক বিজ্ঞানীগণ অনেক এনজাইম আবিষ্কার করেছেন যা DNA এর গঠন পরিবর্তন করতে পারে। কিছু কিছু এনজাইম আছে যার সাহায্যে DNA এর কিছু অংশ (strands) বাদ দিতে অথবা যোগ করতে পারে। এ ধরনের এনজাইম ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা DNA থেকে নির্দিষ্ট জিন বাদ দিয়ে কাস্টমাইজ DNA তৈরি করতে শিখেছে। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো সহজ হবে- টমেটো ঠা-া সহ্য করতে পারে না অন্যদিকে মাছ ঠান্পাডা নিতে থাকতে পারে। বিজ্ঞানীরা খুঁজে বের করবে কোনো জিনের জন্য মাছ ঠান্ডা সহ্য করতে পারে, সেই জিন টমেটোতে প্রতিস্থাপন করলে টমেটো ঠান্ডা সহ্য করতে পারবে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফলে আমরা নিম্মলিখিতভাবে উপকার পেয়ে থাকি-
১। ইনসুলিন উৎপাদন হলো জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সবচেয়ে বড় সুফল। ইনসুলিন ডায়াবেটিক্স রোগের চিকিৎসায় প্রয়োজন হয়।

২। Interferon হলো মানব কোষ থেকে নিঃসৃত এক ধরনের রস (agent) যা ভাইরাস নাশক (Anti viral) হিসেবে কাজ করে। আজকাল জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে তৈরি Interferon ব্যবহৃত হচ্ছে।

৩। জিন থেরাপি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি সুফল। জিন থেরাপির মাধ্যমে রোগের চিকিৎসা এবং ত্র”টিপূর্ণ মানুষের জিন পরিবর্তন করে সুস্থ করে তোলা যায়।

৪। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন অনেক sophisticated ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য উৎপাদন করা হয়। এ নতুন ঔষধ নির্দিষ্ট জিনের ক্লোনিং দ্বারা তৈরি।

৫। হিউম্যান গ্রোথ হরমোন এখন শিল্পজাত ব্যাকটেরিয়া থেকে নিষ্কাশিত হতে পারে। এই হরমোন বামনত্ব (বেঁটে) রোধে ব্যবহৃত হয়। জেনেটিক্যাললি উৎপাদিত হিউম্যান গ্রোথ হরমোন পোড়া ত্বক, ফেটে যাওয়া হাঁড়, এবং খ্যাদ্য নালির আলসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

৬। জেনেটিক্যাললি পরিবর্তিত (modified) ফসল উৎপাদনের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহৃত হচ্ছে। যেমন- সয়াবিন, ভুট্টা, তুলা, তেল বীজ ইত্যাদি। এগুলো পোকা-মাকড় ও অন্যান্য উদ্ভিদ নাশক দ্বারা আক্রান্ত হলেও ছত্রাক ও ভাইরাস প্রতিরোধী। তাছাড়া জেনেটিক্যাললি পরিবর্তিত ফসল অধিক খরা ও ঠান্ডা সহ্য করতে পারে।

৭। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফলে জৈব কারখানায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও এনজাইম উৎপাদন করা যায়। এগুলো প্রচুর সংখ্যায় Tryptophan এর মতো টিকা ও সম্পূরক তৈরি করা সম্ভব। এছাড়া জ্বালানি তৈরিতেও এগুলো ব্যবহৃত হয়।

৮। গর্ভবতী মহিলাদের Fetuses দেখে সন্তানের জেনেটিক ত্র”টিসমূহ নির্ণয় করা যায়। পিতা-মাতা ও ডাক্তার মিলে শিশুর জন্মের পূর্বেই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।

২০) বায়োমেট্রিক্স কী ?
বায়োমেট্রিক্স (Bio metrics): বায়োমেট্রিক্স হলো জৈব বৈশিষ্ট্য/ তথ্য বিশ্লেষণ এবং পরিমাপ করার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যা। তথ্য প্রযুক্তিতে বায়োমেট্রিক্স বলতে ঐ কৌশল বা পদ্ধতিকে বোঝায় যা মানব দেহের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য যেমন- ডি এন এ, আঙ্গুলের ছাপ, চোখের রেটিনা ও আইরিশ, ভয়েস প্যাটার্ন, মুখ ম-লের প্যাটার্ন, হাতের মাপ ইত্যাদি প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে বিশ্লেষণ ও পরিমাপ করে। বায়োমেট্রিক্স যাচাইয়ের দ্বারা পরিচয় প্রমাণ ব্যবস্থা কর্পোরেট ও পাবলিক নিরাপত্তা, ইলেকট্রনিক্স পণ্য এবং বিμয় কেন্দ্রে একটি সাধারণ পদ্ধতি। নিরাপত্তা ছাড়াও বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের কিছু সুবিধা রয়েছে।

২১) ফেইসবুক কী ?
ফেসবুক (Facebook): বিশ্ব সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েব সাইট, যা ৪ঠা ফেব্র”য়ারি ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কোনো রকম খরচ ছাড়া এতে সদস্য হওয়া যায়। মার্ক জোকার বার্গ (Mark Zuckerberg) ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ, এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলি হালনাগাদ করতে এবং তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। ওয়েব সাইটটির সদস্য প্রাথমিকভাবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। পরে এটা সকল বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, হাইস্কুল এবং ১৩ বছরের সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সারা বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ১০০০ মিলিয়ন কার্যকরী সদস্য রয়েছে এই ওয়েব সাইটটির। ফেসবুককে তার চলার পথে বেশ কিছু বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সিরিয়া, চীন, এবং ইরানসহ বেশ কয়েকটি দেশে এটি আংশিক কার্যকর আছে। এটার ব্যবহার সময়ের অপচয় ব্যাখ্যা দিয়ে কর্মচারীদের নির”ৎসাহিত করে তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

২২) টুইটার কী ? 
টুইটার (Twitter): সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থা ও মাইμোব্লগিংয়ের একটি ওয়েব সাইট। এখানে ব্যবহারকারিরা সর্বোচ্চ ১৪০ অক্ষরের বার্তা আদান-প্রদান ও প্রকাশ করতে পারেন। এই বার্তাকে টুইট বলা হয়। টুইটার সদস্যদের টুইট বার্তাগুলো তাদের প্রোফাইল পাতায় দেখা যায়। টুইটারের সদস্যরা অন্য সদস্যদের টুইটটি পড়ার জন্য নিবন্ধন করতে পারেন। টুইট লিখার জন্য সদস্যরা সরাসরি টুইটার ওয়েব সাইট ব্যবহার করতে পারে। তাছাড়াও মোবাইল ফোন বা এসএমএস এর মাধ্যমেও টুইট লেখার সুযোগ রয়েছে। টুইটারের প্রধান কার্যালয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিস্কো শহরে। তাছাড়া টেক্সাসের সান এন্টেনিও এবং ম্যাসাচুসের বুস্টনে টুইটার সার্ভার ও শাখা কার্যালয় আছে। ২০০৬ সালে টুইটার যাত্রা শুর” করে চার বছরের মাথায় এর সদস্য হয় প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন- যা এর জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে।

২৩) এমিম কী ? 
এমিম: এটি একটি সামাজিক মিডিয়া ইন্টারনেট সার্ভিস। যেখানে ব্যবহারকারিরা মন্তব্য করে এবং মাল্টিমিডিয়া লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও) ভাগাভাগি করে একে অপরের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। ডাল্টন কল্ডওয়েল, নেপস্টারের অনেক প্রকৌশলীবিদদের দল ২০০৩ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। মাইস্পেস একে কিনে নিয়েছে এবং বর্তমানে এর সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। মাইস্পেস এর প্রধান শাখা বেভারলি হিলোস, ক্যালিফোর্নিয়াতে।

২৪) ভিডিও কনফারেন্সিং পদ্ধতি কী ? এর সুবিধা সমুহ বর্ণনা কর। 
ভিডিও কনফারেন্সিং: যে যোগাযোগ ব্যবস্থারয় টেলিকনফারেন্সিং যন্ত্রপাতির সাথে ভিডিও ক্যামেরা যুক্ত করে আলোচনায় অংশগ্রনকারীরা পরস্পরের সম্মুখীন হয়ে কথোপকথোনে অংশগ্রহন করতে পারে তাকে ভিডিও কনফারেন্সিং বলে। এ ব্যবস্থায় টেলিভিশনের পর্দায় পরস্পর পরস্পরের ছবি দেখতে পায়। ব্যবসা-বানিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ভিডিও কনফারেন্সের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ভিডিও কনফারেন্সিং সুবিধা সমুহ নিম্মে বর্ণনা করা হলো:
১) সময় ও খরচ বাচিয়ে একাধিক ¯থানে অবস্থানরত ব্যক্তিদের নিয়ে সভা বা সেমিনার আয়োজন করা যায়।
২) এ পদ্ধতিতে দুরবর্তী কোন চিকিৎসকের সাথে কথা বলে চিকিৎসাপত্র নেওয়া যায়।
৩) শিক্ষাক্ষেত্রে ভিডিও কনফারেন্সিং এর গুর”ত্ব অত্যাধিক।এর মাধ্যমে ঘরে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস করা যায়।
৪) সংবাদ সম্মোলন, ভিডিও ইত্যাদি ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে করা যায় ্

২৫) টেলিকনফারেন্সিং কী ? বিভিন্ন ধরণের টেলিকনফারেন্সি এর বর্ণনা দাও। 
টেলিকনফারেন্সিং: টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে দুই এর অধিক লোকের মধ্যে সভা অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়াকে টেলিকনফারেন্সিং বলে। ১৯৭৫ সালে মরি টারফ এ পদ্ধতির আবিষ্কার করেন। বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে যে কোন ব্যক্তি টেলিফোন ব্যবহার করে টেলিকনফারেন্সিং করতে পারে। টেলিকনফারেন্সিং ব্যবহার করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, গবেষক, ছাত্র-শিক্ষকগণ পরস্পরের সঙ্গে মতবিনিময় করে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারেন। বিভিন্ন ধরণের টেলিকনফারেন্সিং ব্যবস্থা নিম্মে আলোচনা করা হলো-
১) পাবলিক কনফারেন্স: এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। এত সকলে অংশগ্রহন করতে পারে।
২) ক্লোজড কনফারেন্স: এটি সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়। শুধুমাত্র নির্ধারিত সংখ্যক ব্যক্তি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অংশ গ্রহন করতে পারে।
৩) রিড অনলি কনফারেন্স: এটি শুধু পড়া যায়। ব্যবহারকারীরা এর কাযর্ বিবরনী পড়ে মন্তব্য করতে পারেন।

 ২৬) টেলিকনফারেন্সিং ও ভিডিও কনফারেন্সিং কী? টেলিকনফারেন্সিং এবং ভিডিও কনফারেন্সিং বিষয় দুটির মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর। [ঢা.-০৭, ০৩, ০৬, কু-০৯, চ-০২, ০৬,১০, রা-০৩,০৫,০৭, ব-০৪,০৬,০৮, ১২,সি-০৫, ০৯,য-০৮]
ভিডিও কনফারেন্সিং: যে যোগাযোগ ব্যবস্থারয় টেলিকনফারেন্সিং যন্ত্রপাতির সাথে ভিডিও ক্যামেরা যুক্ত করে আলোচনায় অংশগ্রনকারীরা পরস্পরের সম্মুখীন হয়ে কথোপকথোনে অংশগ্রহন করতে পারে তাকে ভিডিও কনফারেন্সিং বলে। এ ব্যবস্থায় টেলিভিশনের পর্দায় পরস্পর পরস্পরের ছবি দেখতে পায়।

টেলিকনফারেন্সিং: টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে দুই এর অধিক লোকের মধ্যে সভা অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়াকে টেলিকনফারেন্সিং বলে। ১৯৭৫ সালে মরি টারফ এ পদ্ধতির আবিষ্কার করেন। বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে যে কোন ব্যক্তি টেলিফোন ব্যবহার করে টেলিকনফারেন্সিং করতে পারে।

টেলিকনফারেন্সিং এবং ভিডিও কনফারেন্সিং এর মধ্যে পার্থক্য
১) টেলিকনফারেন্সিং এর বেলায় সভা-সমাবেশগুলো হয়ে থাকে টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে যা কথোপকথন এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ।ভিডিও কনফারেন্সিং  এর বেলায় সভা সমাবেশে উপস্থিত একে অপরকে স্ক্রিনে দেখতে পারে।

২) টেলিকনফারেন্সিং এ ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও সফটওয়্যারগুলো তুলনামুলকভাবে কম শক্তিশালী হয়ে থাকে। অন্যদিকে, ভিডিও কনফারেন্সিং এ ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও সফটওয়্যারগুলো তুলনামুলকভাবে বেশি শক্তিশালী হয়ে থাকে।

৩) টেলিকনফারেন্সিং মুলত ব্যবসা-বানিজ্যের ক্ষেত্রেই বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অন্যদিকে, ভিডিও কনফারেন্সিংব্যবসা-বানিজ্য ছাড়াও স্বাস্থ্যখাতের টেলিমেডিসিন সেবায় শিক্ষাখাতে বেশি ব্যবহৃত হয়।

২৭) মানব বুদ্ধিমত্তা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর। 
মানব বুদ্ধিমত্তা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মধ্যে পার্থক্য-
১) মানব বুদ্ধিমত্তা সরাসরি ইন্দ্রিয়সমুহের অভিজ্ঞতাকে ব্যবহার কেরে তার পারদর্শীতা প্রদর্শন করে। অন্যদিকে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইন্দ্রিয়সমুহের অভিজ্ঞতাকে সরাসরি ব্যবহারের সুযোগ থাকে না।

 ২) মানব বুদ্ধিমত্তা সৃষ্টিশীল। অন্যদিকে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সুষ্টিশীল নয়।

৩) মানব বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতাকে খুব সহজে প্রতির”প তৈরি বা অন্যকে সরবরাহ করা যায় না।অন্যদিকে,  কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মুলত বিশেয় ধরণের সফটওয়্যার প্রোগ্রাম যা খুব সহজেই প্রতির”প তৈরি ও অন্যদের কাছে সরবরাহ করা যায়।

৪) মানব বুদ্ধিমত্তা প্রকৃতিগতভাবে প্রাপ্ত।অন্যদিকে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের দ্বারা কৃত্রিম উপায়ে পাপ্ত।

৫) মানব বুদ্ধিমত্তা চিরস্থায়ী নয়: কোনো কারণে এই বুদ্ধিমত্তার অবনতি হতে পারে। অন্যদিকে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিরস্থায়ী। কম্পিউটার পদ্ধতি ও প্রোগ্রাম বদল রা না হলে এর স্থায়িত্বের হেরফের হয় না।

৬) মানব বুদ্ধিমত্তা ক্রমেই বিকশিত হতে পারে। অন্যদিকে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্বাভাবিকভারে বিকাশের কোনো সুযোগ নেই।

৭) মানব বুদ্ধিমত্তাকে লিখে রাখা সম্ভব নয়। অন্যদিকে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে প্রোগ্রাম কোড আকারে লিখে রাখা যায়।

২৮. ন্যানো টেকনোলজি কী ? 
ন্যানো টেকনোলজি (Nano Technology): ন্যানো শব্দটি গ্রিক nanos শব্দ থেকে এসেছে যার আভিধানিক অর্থ Dwarft. কিন্তু এটি একটি মাপের একক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ১ মিটারের ১০০০০০০০০০ (১০০ কোটি) ভাগের এক ভাগকে বলা হয় ন্যানো মিটার। আর এ ন্যানোমিটার স্কেলে যে সমস্ত টেকনোলজি সম্পর্কিত সেগুলোকেই ন্যানো টেকনোলজি বলে। বিজ্ঞানীরা ন্যানোবিজ্ঞান বা ন্যানোপ্রযুক্তি সম্পর্কে প্রম ধারণা পান নোবেল বিজয়ী পদার্থবিদ Richard Feynman-এর ১৯৫৯ সালের American physical society এর একটি সম্মেলনে দেয়া There’s Plenty of Room at the Bottom”নামের বক্তব্য থেকে। তারও এক দশক পরে Professor Norio Taniguchi  ন্যানো প্রযুক্তি শব্দটি উদ্ভাবন করেন। ন্যানো প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দুটি প্রক্রিয়া আছে। একটি হলো উপর থেকে নিচে (Top to Bottom) এবং অপরটি হলো নীচ থেকে উপরে (Bottom to Top)। প্রতি বছরই দেখা যায়, কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় কিন্তু দাম আগের বছরের তুলনায় কমছে। কারণ এর সাথেও ন্যানো প্রযুক্তির সম্পর্ক রয়েছে। কম্পিউটারের ভিতরের মাইক্রোপ্রসেসরে রযেছে অসংখ্য অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সার্কিট। আর তাতে ব্যবহৃত হচ্ছে ন্যানো প্রযুক্তি। ন্যানো প্রযুক্তির ফলে মোবাইলেই কম্পিউটারের কাজ করা যায় (বর্তমানে বাজারে এ ধরনের কিছু মোবাইল আছে)। তাছাড়া এ প্রযুক্তির ফলে কম্পিউটারের হার্ডডিস্কের ধারণ ক্ষমতা দিন দিন বাড়ছে, যা ১০/১৫ বছর আগে কল্পনাও করা যেত না।

 ২৯) আউটসোর্সিং কী ? আউটসোর্সিং এ বাংলাদেশে সম্ভাবনার কারণগুলো আলোচনা কর।  
আউটসোর্সিং: যখন কোন একটি প্রতিষ্ঠান তার কাজ অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করিয়ে নেন তখন তাকে আুটসোর্র্সিং বলে। অনলাইনের মাধ্যমে সারা বিশ্বে অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠার নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ খুঁজে নেয় এবং কর্ম সম্পাদন করে বুঝিয়ে দেয়। বিনিময়ে ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করে যাচ্ছে। আউটসোর্সিং এ বাংলাদেশে সম্ভাবনা নিম্মে আলোচনা করা হলো:
ক) বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ জনসংখ্যার দিক থেকে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে। অধিক জনগনের পক্ষে দেশে কাজের সুযোগ কম তাই বিশ্বের যে কোন দেশে অনলাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে বাসায় বসে আউটসোর্সিং এর কাজ করে জীবিকিা নির্বাহ করতে পারে।

খ) বাংলাদেশের শ্রমের মুল্য অত্যন্ত কম তাই আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কাজ করে ন্যায্য মুল্য পাওয়া যায়।

গ) দেশের বিপুল সংখ্যক শিক্ষিত, উদ্যোমী প্রযুক্তিবিদ রয়েছেন যারা ক্রমবর্ধমান চাহিদা পুরনের মাধ্যমে নিজেদের কর্মসংস্থান করতে পারতে পারেন।

 ঘ) একটি শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠায় যে পরিমান অর্থের প্রয়োজন হয় তার চার ভাগের এক ভাগ অর্থ দিয়ে আইটি শিল্প পার্ক স্থাপন করা যায়। আইটি পার্ক স্থাপন করা গেলে বিপুল পরিমাান দক্ষ, শিক্ষিত যুবকের বেকার সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

 ঙ) দিন রাত্রি ২৪ ঘন্টা আউটসোর্সিং এর কাজ করা যায়।

 চ) আমাদের দেশের প্রোগ্রামাররা কোন ফার্মে বা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী না করেও ফ্রি ল্যান্সার হিসেবে বিশ্বের কোম্পানীগুলোতে কাজ করতে পারে।

৩০) ডিজিটাল ক্লাস রুম বা মাল্টিমিডিয়া রুম কী? 
ডিজিটাল ক্লাস রুম : ডিজিটাল ক্লাস রুম হচ্ছে কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও মাল্টিমিডিয়া সমৃদ্ধ। শ্রেনিকক্ষে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ডেস্কে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ বা নোট প্যাড ব্যবহার করার ব্যবস্থা থাকবে। শিক্ষক কর্তৃক মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে কম্পিউটার দ্বারা বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে পাঠদানের উপযোগী ক্লাসকে ডিজিটাল ক্লাস রুম বলে।

৩১) Smart Home কী? 
Smart Home: Smart Home  হলো এমন একটি বাসস্থান যেখানে রিমোট কন্ট্রোলিং বা প্রোগ্রামিং ডিভাইসের সাহায্যে বাড়ির হিটিং সিস্টেম, কুলিং সিস্টেম, লাইটিং সিস্টেম ও সিকিউরিটি কন্ট্রোল সিস্টেম ইত্যাদি নিয়ন্ত্রন করা যায়।

৩২) নৈতিকতা কী? 
নৈতিকতা :  নৈতিকতা হলো মানুষের কাজ কর্ম, আচার ব্যবহারের সেই মূলনীতি যার ওপর ভিত্তি করে মানুষ একটি কাজের ভালো বা মন্দ দিক বিচার বিশ্লেষন করতে পারে।

৩৩) এক্সপার্ট সিস্টেম কাকে বলে? 
এক্সপার্ট সিস্টেম :  এক্সপার্ট সিস্টেম হলো এক ধরনের সিদ্ধান্ত সমর্থন পদ্ধতি যা নির্দিষ্ট বিষয়ে মানুষের ন্যায় কৃত্রিম দক্ষতা নিয়ে তৈরি। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অনেকগুলো মা্ইক্রোপ্রসেসর ও  চিপ ব্যবহার করে প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে কম্পিউটার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সৃষ্টি করা হয়। এ সিস্টেম থেকে প্রশ্ন করে উত্তর জানতে পারে।

৩৪) হ্যাকিং(Hacking) কী? 
হ্যাকিং(Hacking) : প্রোগ্রাম রচনা ও প্রয়োগের মাধ্যমে কোন কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্কের ক্ষতিসাধন করাকে হ্যাকিং বলে। অথবা, হ্যাকিং হচ্ছে অনাধিকার প্রবেশ এবং অনৈতিক কর্মকান্ড। যা কম্পিউটারে বা ওয়েবসাইটে ঢুকে অন্যেও তথ্যের ক্ষতি সাধন করাকে হ্যাকিং বলে।
আবিস্কারক ঃ ১৯৯৫ সালে ক্যাভিন ডেভিড মিটনিক (Kevin David Mitnick)।


Share:

0 comments:

Post a Comment

Translate

Total Pageviews

Search This Blog

Blog Archive

Recent Posts