Educational Blog Sites

Saturday, March 10, 2018

Chapter-3.1 (Number System)

১) সংখ্যা আবিষ্কারের ইতিহাস সংক্ষেপে আলোচনা কর। 
সংখ্যা আবিস্কারের ইতিহাস (History Of Inventing Numbers): মানব সভ্যতার সূচনালগ্ন হতে শুরু করে এটির ক্রমবিকাশের সাথে সাথে মানুষ গণনা তথা হিসাব-নিকাসের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে থাকে। প্রাচীনকালে গণনার জন্য নানা রকম উপকরণ ব্যবহার করা হতো। যথা: হাতের আঙ্গুল, নুড়ি পাথর, ঝিনুক, কাঠি, রশির গিট, দেয়ালে দাগ কাটা ইত্যাদি। সময়ের বিবর্তনে উন্নতির ধারাবাহিকতায় গণনার ক্ষেত্রে যুক্ত হলো বিভিন্ন প্রতীক ও চিহ্নের ব্যবহার। খ্রিস্টপূর্ব ৩৪০০ সালে হায়ারোগ্লিফিক্স (Hieroglyphics) চিহ্ন বা সংখ্যা পদ্ধতির মাধ্যমে সর্বপ্রম গণনার কাজে লিখিত সংখ্যা বা চিহ্নের প্রচলন শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে মেয়ান (Mayan) ও রোমান (Roman) সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহারের প্রচলন শুরু হয়। পরবর্তীতে ভারতবর্ষ ও আরবে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির প্রচলন শুরু হয়- যা বর্তমানে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হিসাব-নিকাসের জন্য ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং আজও বহুবিধ গাণিতিক কাজে বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। 

২) সংখ্যা পদ্ধতি কি ? সংখ্যা পদ্ধতি কত প্রকার ও কি কি ? 
সংখ্যা পদ্ধতি (Number System): কোনো সংখ্যা প্রকাশ করার পদ্ধতিকে বলে সংখ্যা পদ্ধতি। অন্য কথায়, যে পদ্ধতির মাধ্যমে সংখ্যা প্রকাশ ও গণনা করা হয় তাকে সংখ্যা পদ্ধতি বলে। সংখ্যা প্রকাশ করার বিভিন্ন প্রতীকই হচ্ছে অঙ্ক। যেমন- ১২৫ সংখ্যাটি ১, ২, ও ৫ এ তিনটি অঙ্ক দ্বারা গঠিত। সভ্যতার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যেসব সংখ্যা পদ্ধতির প্রচলন হয়েছে তাদেরকে প্রধানতঃ দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: 
1) নন-পজিশনাল (Non-Positional) সংখ্যা পদ্ধতি। 2) পজিশনাল (Positional) সংখ্যা পদ্ধতি। 

৩) পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি ও নন পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি সর্ম্পকে আলোচনা কর। 
নন-পজিশনাল (Non-Positional) সংখ্যা পদ্ধতি : একটি প্রাচীনতম পদ্ধতি হচ্ছে নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি। বর্তমানে এ পদ্ধতির প্রয়োগ খুবই কম। যে সংখ্যা পদ্ধতিতে কোনো সংখ্যায় ব্যবহৃত চিহ্ন বা অঙ্কসমূহ কোনো স্থানীয় মান বা অবস্থানের উপর নির্ভর করে না, তাকে নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। সংখ্যার মধ্যে ব্যবহৃত অঙ্কগুলো কোন অবস্থানে আছে তার কোনো প্রভাব নেই। সংখ্যায় ব্যবহৃত অঙ্ক যেখানেই থাকুক না কেন এদের নিজস্ব মান দ্বারাই সংখ্যাটির মান নির্ধারণ করা হয়। যেমন- প্রাচীন হায়ারোগ্লিফিক্স সংখ্যা পদ্ধতি। 
পজিশনাল (Positional) সংখ্যা পদ্ধতি : বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বহুল প্রচলিত সংখ্যা পদ্ধতি হচ্ছে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি। যে সংখ্যা পদ্ধতি প্রকাশ করার জন্য সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মৌলিক চিহ্ন, বেজ বা ভিত্তি এবং এর অবস্থান বা স্থানীয়মান থাকতে হয় তাকে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। যেমন বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে ০ ও ১ এ দুটি মৌলিক চিহ্ন ব্যবহৃত হয় এবং বেজ হচ্ছে ২। ডিজিটের অবস্থানের উপর সংখ্যার মান নির্ভর করে। এজন্য বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিকে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতিতে কোনো একটি সংখ্যার মান বের করার জন্য তিনটি উপাদানের প্রয়োজন হয়। যথা- 
১. সংখ্যাটিতে ব্যবহৃত অঙ্কগুলোর নিজস্ব মান, 
২. সংখ্যা পদ্ধতির বেজ (Base) বা ভিত্তি, 
৩. সংখ্যাটিতে ব্যবহৃত অঙ্কগুলোর অবস্থান বা স্থানীয় মান। 
পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতিতে প্রতিটি সংখ্যাকে র‌্যাডিক্স (Radix) পয়েন্ট (.) দিয়ে পূর্ণাংশ (Integer) ও ভগ্নাংশ (Fraction) এ দুঅংশে ভাগ করা হয়। যেমন: ১২৫.৬২৫। এখানে ১২৫ পূর্ণাংশ, (.) র‌্যাডিক্স পয়েন্ট ও .৬২৫ ভগ্নাংশ।

৪)  পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি ও নন পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতির পার্থক্য আলোচনা কর। 
উত্তর : ১) যে সংখ্যা পদ্ধতি প্রকাশ করার জন্য সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মৌলিক চিহ্ন, বেজ বা ভিত্তি এবং এর অবস্থান বা স্থানীয়মান থাকতে হয় তাকে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। অন্যদিকে, যে সংখ্যা পদ্ধতিতে কোনো সংখ্যায় ব্যবহৃত চিহ্ন বা অঙ্কসমূহ কোনো স্থানীয় মান বা অবস্থানের উপর নির্ভর করে না, তাকে নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে।
২) একটি আধুনিক পদ্ধতি হচ্ছে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি। অন্যদিকে, একটি প্রাচীনতম পদ্ধতি হচ্ছে নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি।
৩) বর্তমানে সবচেয়ে গুর”ত্বপূর্ণ ও বহুল প্রচলিত সংখ্যা পদ্ধতি হচ্ছে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি। অন্যদিকে, বর্তমানে এ পদ্ধতির প্রয়োগ খুবই কম।
৪) বাইনারি,অকটাল,হেক্সাডেসিমেল ও দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি হল পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতির উদাহরণ। অন্যদিকে, হায়ারোগ্লিফিক্স, মেয়ান ও রোমান সংখ্যা পদ্ধতি হল নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতির উদাহরণ।


৫)  পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি কত প্রকার ও কী কী ? 
পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি প্রকারভেদ: পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি চার প্রকার। যথা- 
১. দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি (Decimal Number System)
২. বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি (Binary Number System)
৩. অকট্যাল সংখ্যা পদ্ধতি (Octal Number System)
৪. হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি (Hexadecimal Number System)

৬) সংখ্যা পদ্ধতি কী? বিভিন্ন প্রকার সংখ্যা পদ্ধতির বর্ণনা দাও। [ঢা-০৫,০৮, ১১,কু-০৭, রা-০৩,০৬,১১, ব-০৭,০৮,০৯,সি-১১,য-১৩,চ-১২]
অথবা, সংখ্যা পদ্ধতি বলতে কী বুঝ? উহা কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ বর্ণনা কর। [ব-০৭]
সংখ্যা পদ্ধতি (Number System): কোনো সংখ্যা প্রকাশ করার পদ্ধতিকে বলে সংখ্যা পদ্ধতি। অন্য কথায়, যে পদ্ধতির মাধ্যমে সংখ্যা প্রকাশ ও গণনা করা হয় তাকে সংখ্যা পদ্ধতি বলে।
দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি (Decimal Number System): সাধারণ হিসাব-নিকাসের জন্য দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। যে সংখ্যা পদ্ধতিতে ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯ এ দশটি অঙ্ক বা চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাকে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি বলে। যেহেতু দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে ০ হতে ৯ পর্যন্ত দশটি অঙ্ক বা চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। সুতরাং এ বেজ ১০। উদাহরণ: (125)10
বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি (Binary Number System): যে সংখ্যা পদ্ধতিতে ০ ও ১ এ দুটি মৌলিক অঙ্ক ব্যবহার করা হয় তাকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি বলে। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে যেহেতু ২ টি অঙ্ক ব্যবহার করা হয়। সুতরাং এটির বেজ বা ভিত্তি ২। উদাহরণ: (0101010)2
অকট্যাল সংখ্যা পদ্ধতি (Octal Number System): যে সংখ্যা পদ্ধতি ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ এ আটটি অঙ্ক বা চিহ্ন নিয়ে গঠিত তাকে অকট্যাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। অকট্যাল সংখ্যা পদ্ধতিতে যেহেতু ৮ টি অঙ্ক ব্যবহার করা হয়। সুতরাং এটির বেজ বা ভিত্তি হলো ৮।
উদাহরণ: (37.56)8
হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি (Hexadecimal Number System): যে সংখ্যা পদ্ধতিতে ১৬ টি চিহ্ন বা অঙ্ক আছে, সেই সংখ্যা পদ্ধতিকে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতির মৌলিক অঙ্ক বা প্রতীক মোট ১৬ টি। যথা: ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯ এবং, A, B, C, D, E F এ 16 টি মৌলিক প্রতীক বা অঙ্ক ব্যবহার করে সকল প্রকার গাণিতিক হিসাব- নিকাস সম্পাদন করা হয়। যেহেতু এখানে ১৬টি অঙ্ক বা প্রতীক ব্যবহার করা হয়। তাই হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতির বেজ বা ভিত্তি হলো ১৬। উদাহরণ- (AB6.95)16


৭) বাইনারি সংখ্যার ভিত্তি কত? কম্পিউটার পরিচালনায় বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
বাইনারি সংখ্যার ভিত্তি: বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে যেহেতু ২ টি অঙ্ক ব্যবহার করা হয়। সুতরাং এটির বেজ বা ভিত্তি ২। উদাহরণ: (0101010)2
কম্পিউটার পরিচালনায় বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির গুরুত্ব: বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি হলো, একটি সহজাত গণনা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে ‘০’ এবং ‘১’ এ দুটি বিট ব্যবহার করা হয়। নিম্মে কম্পিউটার ডিজাইনে অন্যান্য সংখ্যা পদ্ধতি অপেক্ষা বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহারের অন্যতম কারণ ও সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
১. বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি অন্যান্য সংখ্যা পদ্ধতি অপেক্ষা সরলতম সংখ্যা পদ্ধতি।
২. কম্পিউটারে বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ করা হয় বিভিন্ন ইলেকট্রনিক/ ইলেকট্রিক্যাল কম্পোনেন্ট যথা: ট্রানজিস্টর, সেমিকন্ডাক্টর (অর্ধপরিবাহী), ম্যাগনেটিক উপাদান ইত্যাদির মাধ্যমে। উল্লেখিত সকল উপাদান সাধারণভাবে দুটি শর্ত (Condition) বা অবস্থা (State) নির্দেশ করে। একটি ১ (ON) অপরটি ০ (OFF)। এখানে ON, OFF  দ্বারা যথাক্রমে বিদ্যুতের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতিকে বোঝানো হয়েছে।
৩. কম্পিউটার কাজ করে ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালের ভিত্তিতে। বাইনারির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ০ ও ১ এর জন্য দুটি আলাদা আলাদা ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল তৈরি করা যতটা সহজ ডেসিমাল সিস্টেমের ক্ষেত্রে ১০ টি ও হেক্সাডেসিমালের ক্ষেত্রে পৃথক পৃথক ১৬ টি সিগন্যাল তৈরি করা তুলনামূলক বেশি জটিল।
৪. বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যতীত অন্যান্য পদ্ধতিতে সার্কিট ডিজাইন তুলনামূলক জটিল ও ব্যয়বহুল।
৫. কম্পিউটার সিস্টেমে ব্যবহৃত অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস যথা- ডিজিটাল ক্যামেরা, ডিজিটাল ফোন ইত্যাদি বাইনারি মোডে কাজ করে। ফলে তাদের খুব সহজে কম্পিউটারের সাথে ইন্টারফেসিং করা যায়।
সুতরাং কম্পিউটার ডিজাইন ও এটি বিভিন্ন ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, অন্যান্য সংখ্যা পদ্ধতি অপেক্ষা বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ব্যবহার অধিকতর সুবিধাজনক।

৮) কোন অবস্থায় সংখ্যা পদ্ধতির উদ্ভব ঘঠে? বর্ণনা কর।
উত্তর ঃ সংখ্যার ধারণা স্পষ্ট হতে শুরু করে বাণিজ্যের প্রসারের সাথে সাথে। কারণ এ সময় হিসাব-সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার প্রয়োজন পড়ে এবং এক গোত্রের সাথে আরেক গোত্রের তথ্যের আদান-প্রদান জরুরি হয়ে উঠে। একটি স্পষ্ট সংখ্যা ধারনাার উদাহরণ হিসেবে বাংলা সংখ্যা পদ্ধতির কথা বলা যেতে পারে। এক থেকে দশ পর্যন্ত হলো মুল সংখ্যা। সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে বাণিজ্যের প্রসার ঘটে এবং সেই সংখ্যার ধারণা স্পষ্ট হতে শুরু করে।



Share:

0 comments:

Post a Comment

Translate

Total Pageviews

Search This Blog

Blog Archive

Recent Posts